গাজায় প্রাণ হারালেন বাংলাদেশের হয়ে কাজ করা ফিলিস্তিনি দুই স্বেচ্ছাসেবী

বাম পাশে নিহত আবু ওমর
বাম পাশে নিহত আবু ওমর  © টিডিসি সম্পাদিত

ফিলিস্তিনের গাজা যেন প্রতিদিনই পরিণত হচ্ছে এক মৃত্যু উপত্যকায়। শিশু, নারী, বৃদ্ধ কেউই রক্ষা পাচ্ছেন না দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত আর সহিংসতার হাত থেকে। এমন পরিস্থিতিতে মানবিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসা ব্যক্তিরাও এখন আর নিরাপদ নন। এবার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন দুইজন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী, যারা বাংলাদেশের অলাভজনক সংগঠন মাস্তুল ফাউন্ডেশন–এর হয়ে গাজায় ত্রাণ ও খাদ্য বিতরণে কাজ করছিলেন।

আজ রবিবার (৬ এপ্রিল) সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিহতদের মধ্যে একজনের নাম আবু ওমর, যিনি গাজার উত্তরের বেইত লাহিয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। জানা গেছে, নিহত দুজনই মাস্তুল ফাউন্ডেশনের রান্নার টিমে কাজ করতেন। রমজান উপলক্ষে গাজাবাসীর মাঝে রান্না করা খাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণে সক্রিয় ছিলেন তারা।

এ বিষয়ে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গত দেড় বছর ধরে মিশর সরকারের অনুমতি ও সহযোগিতায় আমরা গাজায় নিয়মিতভাবে ত্রাণ পাঠিয়ে আসছি। খাদ্য, পানীয়, ওষুধ— যা যা দরকার— আমরা পৌঁছে দিয়েছি। এবার রমজানেও গাজাবাসীর জন্য আমরা গরম খাবার রান্না করে প্রতিদিন পৌঁছে দিচ্ছিলাম।

তিনি আরও জানান, সেখানে আমাদের কয়েকজন স্থানীয় ভলান্টিয়ার ছিলেন, যারা রান্না, প্যাকেটিং এবং বিতরণে সহযোগিতা করতেন। গত কয়েকদিন ধরে আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। আজ খবর পেলাম, দুজন ইসরায়েলি বোমা হামলায় শহীদ হয়েছেন। এটা শুধু আমাদের জন্য নয়, মানবতার জন্যও এক অপূরণীয় ক্ষতি।

এদিকে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানে মৃত্যুর সংখ্যা ইতিমধ্যে ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। জাতিসংঘের হিসাবে, এর মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। প্রতিদিনই ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তুলে আনা হচ্ছে মৃতদেহ। পানি, বিদ্যুৎ, ওষুধ এবং খাদ্যের তীব্র সংকটে দিন কাটাচ্ছে লাখো মানুষ।  

গত এক সপ্তাহে গাজার বিভিন্ন স্থানে চালানো ইসরায়েলি ড্রোন ও বিমান হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। হাসপাতালগুলো প্রায় অকার্যকর, বহু মানুষ আহত অবস্থায় চিকিৎসা না পেয়েই মারা যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এসব হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করলেও এখনো কার্যকর কোনো আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।  

এমন বাস্তবতায় মাস্তুল ফাউন্ডেশনের মতো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোই হয়ে উঠেছে গাজার মানুষের জন্য বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয়। কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, আমরা থেমে যাব না। যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের রক্ত বৃথা যাবে না। আমাদের কাজ চলবে। গাজার মানুষের পাশে আমরা আছি, থাকব।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence